দক্ষিণসুরমা জুয়া-পতিতাসহ অপরাধ-অপকর্মের আখড়া | তদন্ত রিপোর্ট

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪২ অপরাহ্ন

জাতীয় সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকায় সারাদেশে জেলা/উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা জীবন বৃত্তান্ত পাঠান ই-মেইলে:- tadantareport1992@gmail.com কিংবা যোগাযোগ:- +8801719-194493।

জাতীয় সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকায় সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে।

দক্ষিণসুরমা জুয়া-পতিতাসহ অপরাধ-অপকর্মের আখড়া

দক্ষিণসুরমা জুয়া-পতিতাসহ অপরাধ-অপকর্মের আখড়া

★অসাধু পুলিশ ও কতিপয় সাংবাদিকের মদদে জুয়াড়ী ও কামুকদের উৎপাত দ্বিগুণ
★অসাধু পুলিশ ও কতিপয় সাংবাদিকের মদদে জুয়াড়ী ও কামুকদের উৎপাত দ্বিগুণ

তদন্ত রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমায় কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না জুয়া খেলা, পতিতা বাণিজ্যসহ রকমফের অপরাধ অপকর্মের আখড়া। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে এক দু’জনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠালেও তারা জামিনে বের হয়ে আবারও জড়িত হয়ে পড়ে এসব অপরাধে। আর এ অপরাধ অপকর্মের আস্তানা খোলে কেউ কেউ দিনমজুর থেকে হয়ে উঠেছেন কোটিপতি। মালিক হয়েছেন একাধিক গাড়ি ও বাড়ির।

জানা গেছে, নগরীর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী, রেলওয়ে কলোনী ও এর আশ পাশে চলছে অনেক জুয়ার বোর্ড। পাশপাশি আবসিক হোটেল ও কলোনীগুলোতে জমজমাট আকার ধারন করেছে নারীদেহের ব্যবসা। এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোর এখন ব্যবসার প্রধাম মাধ্যম হয়ে উঠেছে পতিতাবাণিজ্য। সূত্র মতে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় রাতের বর্ডার মিলছে না আবাসিক হোটেলগুলোতে। তাই দক্ষিণ সুরমায় পূর্ব হতে গড়ে ওঠা প্রায় অর্ধশত হোটেলে এখন আর বর্ডার থাকেন না বললেই চলে। তাই ব্যবসা চালু রাখতেই হোটেল মালিক ও পরিচালকরা বেছে নিয়েছেন নারীদেহের এ ব্যবসা।

প্রতিদিন এসব হোটেলে রেলযাত্রী, বিভিন্ন স্থানের যাত্রী নামে জোড়া-জোড়া নারীপুরুষ উঠিয়ে ব্যবসা করছেন হোটেল পরিচালকরা। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং বয়ফ্রেন্ড ও গার্লফ্রেন্ডরা যাত্রী বেশে এসব হোটেলে রাত্রীযাপন ও আমোপ্রমোদ করে থাকে। পাশপাশি হোটেল পরিচালকরাও বিভিন্ন স্থান থেকে দালালদের মাধ্যমে যুবতী ও তরুণীদেও এনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে রেখে অন্যদের হাতে তুলে দেন। দক্ষিণ সুরমার এসব আবাসিক হোটেল এখন ধনাঢ্য ও প্রবাসী কামুকদের মনোরঞ্জনের আখড়া হয়ে উঠেছে।

বেপরোয়া এ হোটেল ব্যবসায়ী ও জুয়ারীদের মদদ দিচ্ছে এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, অসাধু পুলিশ ও কতিপয় হলুদ সাংবাদিক। তাদের ছত্রছায়ায় কিছুতেই বন্ধ হচ্ছেনা দক্ষিণ সুরমায় থাকা বহু জুয়ার বোর্ড ও আবাসিক হোটেল নামের মিনি পতিতালয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর দক্ষিণ সুরমা থানাধীন কদমতলী পুলিশ ফাঁড়ির কিছু পুলিশ ও হলুদ সাংবাদিক এসব জুয়াড়ি ও হোটেল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক সাপ্তাহিক ও মাসিক বখরা পেয়ে থাকে। ফলে কিছুতেই থামছে না এসব অপরাধ অপকর্ম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও কোনো সুফল মিলছে না।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন জুয়া বোর্ড ও আবাসিক হোটেলগুলোতে জুয়াড়ী ও কামুকদের উৎপাত দ্বিগুণ হারে বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই অপরাধে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, দিনমজুর, রিকশাচালক, যানবাহন চালক-শ্রমিকসহ বেকার যুবকরা বেশি অংশ নিচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

আর্থিক লাভের আসায় প্রতিনিয়ত এসব অপরধে যুক্ত হচ্ছে নানা শ্রেণির মানুষ ও ব্যবসায়ী। এতে করে এলাকায় নৈতিক অবক্ষয়ও বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন জুয়ার আসরের পরিচালক ও হোটেলে কর্তাব্যক্তিরা হোটেল ও জুয়র বোর্ডের আড়ালে নারী দেহের ব্যবসায়ও জড়িত হয়ে পড়েছে। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ধনাঢ্য ও কামুকদের কাছে পারটাইম ও পারনাইট যুবনারীদে সরবরাহ করে কাড়ি কাড়ি টাকা কামাই করে চলেছে বলে অভিযোগে প্রকাশ। এক পরিসংখ্যান মতে দক্ষিণ সুরমার কদমতলী, টার্মিনাল রোড, রেল গেইট এলাকায় প্রায় ২০টি আবাসিক হোটেলে পতিতা বাণিজ্য ও ৪ থেকে ৫ টি জুয়ার বোর্ডের সন্ধ্যান পাওয়া গেছে।

পুুলিশের একটি সূত্রমতে, গত কয়েক মাসে সিলেট নগরে অন্তত শতাধিক জুয়ার আসর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর এই অভিযানে সবচেয়ে বেশি প্রশংসার দাবিদার মহানগর পুলিশ। কিন্তু জুয়ার আসর বন্ধ করা হলেও ফাঁড়ির ও কিছু অসাধু পুলিশের মাঠপর্যায়ের সদস্যদের কারণে দক্ষিণ সুরমা এলাকার জুয়া খেলা ও নারীদেহের ব্যবসা ক্রমশ জমজমাট আকার ধারণ করেছে।

পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, অভিযান পরিচালনা করেও দমন করা যাচ্ছে না এসব অপরাধ-অপকর্ম। কারণ এসব অপরাধে পুলিশ কাউকে আটক করলেও তাদের সাজা কম হয়। গ্রেপ্তারের পর অনেকে জেলে যাওয়ার আগেই জামিনে বের হয়ে পুনরায় ওই অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। আর এসব কারণে নিয়মিত অভিযান চললেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

অতিসম্প্রতি স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে দু’একটি জুয়ার আসর বন্ধ হলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা কয়েকটি জুয়ার বোর্ড বা আসর বন্ধ হচ্ছে না। ভয়ে স্থানীয়রা এর প্রতিবাদও করতে পারছেন না। জুয়া ও হোটেল ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কর্তাব্যক্তি এবং কিছু সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের ম্যানেজ করেই তারা এসব অপরাধ অপকর্মে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo
error: Content is protected !!